স্বদেশ ডেস্ক:
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র বলেই উপদেশ দেয়। দোহা সফর শেষে দেশে ফিরে আজ মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিংয়ে প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাংলাদেশের কাছে বোয়িং বিক্রির প্রস্তাব দিচ্ছেন। গতকাল সোমবারও তিনি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করার পাশাপাশি মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতির কথা তুলে ধরা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বোয়িং কেনা-বেচার সঙ্গে বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া বা ভিসানীতির কোনো সম্পর্ক নেই।’
তিনি বলেন, ‘বড় দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতরা সবসময় তাদের দেশের জিনিস কেনার জন্য রীতিমতো পিড়াপিড়ি করেন। এটা তাদের দায়িত্বের অংশ। আমরা এটা নিয়ে রাগ করছি না। আপনি গ্রহণ করলে ভালো, না করলেও সমস্যা নেই।’
নির্বাচনের আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বোয়িং কেনার ব্যাপারে দৌড়ঝাঁপের বিষয়ে ড. মোমেন বলেন, ‘মার্কিনিরা অনেক দিন ধরেই এটা আমাদের কাছে বিক্রি করতে চাচ্ছে। আমরাও কিছু কিনতে চাচ্ছি, কিন্তু আমাদের টাকার সমস্যা। তারা প্রস্তাব দিয়েছে। এদিকে আবার ব্রিটিশ সরকারও যুক্তরাজ্য থেকে ১০টা এয়ারবাস কেনার প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে দুটি কার্গো আছে। টাকা-পয়সার অভাবে কিনতে পারছি না। কিন্তু আমাদের দরকার। ফ্রান্স, ইতালিও চায় বিক্রি করতে। আমাদের টাকা-পয়সা হলে কিনব ‘
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে কি না, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে না, এগুলো মিডিয়াতে চলছে। আপনারা (সাংবাদিকরা) ওদের ত্যক্ত করেন। আল্লার ওয়াস্তে ওদের ত্যক্ত করবেন না। এটা আমাদের খুব লজ্জা লাগে। বিদেশি একজন রাষ্ট্রদূত কোথাও গেলে তার প্রাইভেসি নষ্ট করেন। আমি এটা পছন্দ করি না।’
পিটার হাসের ছুটিতে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সেই ব্যাটা ছুটিতে গেছে। সেখানেও আপনারা (সাংবাদিকরা) বকবক করছেন। সে আমাদের বন্ধু। বন্ধু হলে ভালো-মন্দ বলবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর। অমুক স্যাংশন হচ্ছে, তমুক স্যাংশন হচ্ছে, এগুলো আপনারা (সাংবাদিকরা) বলেন। ওরা আমাদের এসব বলে না। আমরা আরও শক্ত সম্পর্ক গড়তে চাই। আমরা একটা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করব। তারাও চায় একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। তার সঙ্গে তারা যুক্ত করেছে, সংঘাতহীন নির্বাচন, কিন্তু আমরা বলেছি, আমরা নিশ্চয়তা দিতে পারছি না ।’
ড. মোমেন বলেন, ‘আমরা মনে করি, আমেরিকার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা খুব শক্ত। তারা বন্ধু বলেই আমাদের উপদেশ দেয়। তাই যেটা ভালো হয় সেটাই আমরা গ্রহণ করি। যেটা বাস্তব নয় সেটা আমরা গ্রহণ করি না। সেটার জন্য তারা রাগও করে না।’